নিজস্ব প্রতিবেদক
১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৪, ৫:৩৮ অপরাহ্ন
অনলাইন সংস্করণ

২৬ বছরে পদার্পণ করলো তিন রাষ্ট্র নায়কের স্মৃতি বিজড়িত দেবীগঞ্জ করতোয়া সেতু

বাংলাদেশের তিন জন রাষ্ট্র নায়কের প্রচেষ্টার স্মৃতিকে জাগরুক করে স্বগৌরবে ২৫ পেরিয়ে ২৬ এ পদার্পণ করলো দেবীগঞ্জবাসীর বহুল প্রত্যাশিত চতুর্থ চীন-বাংলাদেশ মৈত্রী সেতু। যা করতোয়া সেতু নামেই অধিক পরিচিত।

 

১৯৯৮ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে করতোয়া নদীর উপর নির্মিত চতুর্থ চীন-বাংলাদেশ মৈত্রী সেতুর উদ্বোধন করেন।

এর আগে ১৯৯৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া এ সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এছাড়া সামরিক শাসক হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদ ১৯৮৮ সালে করতোয়া সেতু নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন, যদিও পরবর্তীতে নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে যায়।

করতোয়া নদী ভারতের পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি জেলায় উৎপত্তি লাভ করে বাংলাদেশের পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার ভজনপুর ইউনিয়ন দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। এ নদী পঞ্চগড়, দিনাজপুর হয়ে বগুড়ায় গিয়ে শেষ হয়েছে। করতোয়া নদীর সর্ব বিস্তৃত অংশটি দেবীগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত।

সেতু নির্মাণের আগে নীলফামারী জেলার সাথে পঞ্চগড় জেলার এবং দেবীগঞ্জ উপজেলার সাথে পঞ্চগড় জেলা শহরের যোগাযোগ ব্যবস্থা খারাপ ছিল। বর্ষাকালে নদীর ঐপাড়ের ৬ টি ইউনিয়নের বাসিন্দাদের চিকিৎসা সহ নাগরিক সেবা নিতে নৌকায় করে খরস্রোতা করতোয়া পাড়ি দিয়ে দেবীগঞ্জ উপজেলা সদরে আসতে হতো।

বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যকার বন্ধুত্বের নিদর্শন হিসেবে ১৯৯৭ সালে খরস্রোতা করতোয়া নদীর উপর চতুর্থ চীন-বাংলাদেশ মৈত্রী সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয় এবং ১৯৯৮ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি সেতুটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়। সেতুটির দৈর্ঘ্য ৫৭৭ দশমিক ৪০ মিটার এবং প্রস্থ ১০ মিটার।

সেতুটি উদ্বোধনের পর দেবীগঞ্জ উপজেলার মানুষের যাতায়াত ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় শিক্ষা, স্বাস্থ্য সেবা সহ নাগরিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত হয়েছে এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে এসেছে আমূল পরিবর্তন। এছাড়া এই সেতু থেকে সরকার প্রতিবছর মোটা অংকের রাজস্ব আদায় করতে পারছে।

করতোয়া সেতু উদ্বোধনের পর থেকে দেবীগঞ্জবাসীর বিকেলের অবসর সময় কাটানোর স্থানে পরিণত হয় সেতুর দুই পাড়। ২০০৯ সালে পঞ্চগড়ের তৎকালীন জেলা প্রশাসক বনমালী ভৌমিক করতোয়া সেতুর পূর্ব প্রান্তে ডিসি পার্ক নামে একটি শিশু পার্ক নির্মাণ করেন। বর্তমানে দেবীগঞ্জ উপজেলাসহ পাশ্ববর্তী জেলা ও উপজেলার মানুষের কাছে জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে ডিসি পার্ক।

করতোয়া সেতু নির্মাণের এই গৌরব উজ্জ্বল ইতিহাস নতুন প্রজন্মের অনেকের কাছেই অজানা। স্বাধীনতা পরবর্তী দেবীগঞ্জ উপজেলা বাসীর সব থেকে বড় প্রাপ্তি এই চতুর্থ চীন-বাংলাদেশ মৈত্রী সেতু।

 

 

•প্রতিবেদন: সিরাতুল মোস্তাকিম

•ছবি: রাশিনুর রহমান

এস.এম/ডিএস

Facebook Comments Box

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

পঞ্চগড়ে বিএসএফের গুলিতে দুই বাংলাদেশি নিহত 

তাপদাহের কারনে পাইকারি বাজারে বেড়েছে মরিচের দাম

দেবীগঞ্জ টেকনিক্যাল স্কুলে অভিভাবক সম্মেলন অনুষ্ঠিত

নির্বাচনে অংশগ্রহণ করায় বিএনপির দুই নেতা বহিষ্কার

দেবীগঞ্জে মরিচের বস্তায় ফেনসিডিল পাচারের সময় মাদক ব্যবসায়ী আটক

পরকীয়া সম্পর্ক রাখতে অস্বীকৃতি জানানোয় খুন হন শাহনাজ  

দেবীগঞ্জে যুবদল আহ্বায়কের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার 

দেবীগঞ্জে জুয়া খেলার সরঞ্জামসহ ছয় জুয়াড়ি আটক 

পঞ্চগড় আদালতের নিয়োগে আইনমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন

দেবীগঞ্জে দুইশো পিস ট্যাপেন্ডাডল ট্যাবলেটসহ মাদক ব্যবসায়ী আটক

১০

দেবীগঞ্জে বৃষ্টির জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়লেন ধর্মপ্রাণ মুসল্লি

১১

পঞ্চগড়ে ধান ক্ষেতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে যুবকের মৃত্যু

১২

দেবীগঞ্জে হিট স্ট্রোকে প্রাইভেট কার চালকের মৃত্যু 

১৩

দেবীগঞ্জ উপজেলা প্রেস ক্লাবের নতুন কমিটি গঠন

১৪

দেবীগঞ্জে বড় ভাইয়ের আঘাতে ছোট ভাইয়ের মৃত্যু 

১৫

দেবীগঞ্জে নামসর্বস্ব সংগঠনের বিরুদ্ধে সরকারি খাল দখলের অভিযোগ 

১৬

দেবীগঞ্জে আলোচিত সেলিম হত্যা মামলার প্রধান আসামি গ্রেফতার

১৭

দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে উপজেলা নির্বাচনে বিএনপির তিন নেতা

১৮

দেবীগঞ্জে  উপজেলা চেয়ারম্যান পদে পাঁচ জনের মনোনয়নপত্র দাখিল 

১৯

দেবীগঞ্জে ভার্মি কম্পোস্ট সার উৎপাদন করে স্বাবলম্বী রাসেল প্রধান

২০