পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে আশীর্বাদের পর মানসিক চাপ সহ্য করতে না পেরে বিষ পানে আত্মহত্যা করেছে লতা রানী(১৯) নামে এক কনে।
বুধবার (৩ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলার দেবীডুবা ইউনিয়নের কামাতপাড়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। মৃত লতা রানী একই এলাকার অতুল চন্দ্র রায়ের মেয়ে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দুপুর ১টায় লতা রানী বাসার নিজ কক্ষে বিষ পান করেন। পরে পরিবারের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। পরিস্থিতির অবনতি হলে জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। রংপুরের উদ্দেশ্যে রওনা দিলে পথিমধ্যে লতা মারা যান।
পরিবারের সদস্যরা জানান, লতা রানী ও একই ইউনিয়নের টাকাহারা এলাকার ললিত চন্দ্র রায়ের ছেলে নবদ্বীপ রায়ের মধ্যে এক বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বিষয়টি জানাজানি হলে লতার পরিবার থেকে নবদ্বীপের বাসায় বিয়ের প্রস্তাব দেওয়া হয়। প্রথম দিকে ছেলের পরিবার রাজি না হলেও পরে জনপ্রতিনিধিদের মধ্যস্থতায় বিয়ের দিন তারিখ ঠিক হয়। গত ১৪ মার্চ সনাতন ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী আশীর্বাদী সম্পন্ন হয়। বিয়ের খরচ বাবদ ছেলের পরিবারকে দুই লাখ টাকা দেওয়া হয়। বিয়ের দিন বাকী পাঁচ লাখ টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
তবে আশীর্বাদীর পর থেকে নবদ্বীপ লতাকে ফোন করে বিয়ে করবে না, বিয়ে হলেও ডিভোর্স দিবে, বিয়ের পর নির্যাতন করবে বলে হুমকি দিতে থাকেন। ক্রমাগত নবদ্বীপের এমন আচরণে লতা মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পড়েন। আত্মহত্যার আগে লতা একটি সুউসাইড নোট রেখে যায়। যাতে নবদ্বীপের একাধিক সম্পর্কে যুক্ত থাকা, লতাকে দুশ্চরিত্রা বলা, বিয়ের পর অত্যাচার ও ডিভোর্সের হুমকির কথা উল্লেখ করেন লতা।
আত্মহত্যার ঘটনাটি নিশ্চিত করে দেবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরকার ইফতেখারুল মোকাদ্দেম বলেন, “মরদেহ পোস্টমর্টেমের জন্য পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। এঘটনায় আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা দায়ের করা হবে।”
এস.এম/ডিএস
মন্তব্য করুন