এই ঘটনায় গত ০৬ অক্টোবর এক কিশোরীর বাবা মহিলা আনসার ভিডিপি সদস্যের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত সহ মোট তিন জনের নামে দেবীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলার নথি ও ভুক্তভোগীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, দূর্গা পূজার দশমীর (০৫ অক্টোবর ) দুই দিন আগে দেবীগঞ্জ পৌরসভার মধ্যপাড়া দুর্গা মন্ডপে দায়িত্ব পালনকারী আনসার ভিডিপি সদস্য চায়না বেগমের সাথে পরিচয় হয় ভুক্তভোগী দুই যুবকের। পরে আনসার ভিডিপি সদস্য চায়না বেগম নিজের ভাগিনা পরিচয় দিয়ে এক যুবকের সাথে পরিচয় করিয়ে দেন দুই কিশোরীকে।
দশমীর দিন (০৫ অক্টোবর) আনসার ভিডিপি সদস্য কিশোরীদের সাথে নিয়ে ময়নামতি চরে ঘুরতে যান। ওই দিন বিকাল ৪টার পর ময়নামতি চরে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরে মন্ডপে ডিউটি থাকার কথা বলে এবং ডিউটি শেষ করে পুনরায় ফিরে আসবেন বলে দুই কিশোরীকে জানান। ফিরে আসার আগ পর্যন্ত নিজের ভাগিনা হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেওয়া দুই যুবকের সাথে ময়নামতি চরে ঘুরতে বলেন। প্রথম দিকে কিশোরীরা চলে আসতে চাইলেও চায়না বেগম ফিরে আসবেন বলে আশ্বস্ত করায় তারা সেখানেই থেকে যান।
এরপর সন্ধ্যা আনুমানিক ৬টার দিকে এক কিশোরীকে নদীর ধারে এবং অপর কিশোরীকে ময়নামতি চরে থাকা শিমূল গাছের তলায় নিয়ে গিয়ে মুখ চেপে ধরে ধর্ষণ করে অভিযুক্ত দুই যুবক। এতে দুই কিশোরী অজ্ঞান হয়ে পড়েন। ধর্ষণ শেষে অভিযুক্তরা দুই কিশোরীকে ফেলে পালিয়ে যান।
জ্ঞান ফিরে পাওয়ার পর ঘটনাস্থল থেকে অসুস্থ অবস্থায় বাসায় ফিরে আসেন দুই কিশোরী। এরপর পরিবারের সদস্যদের বিষয়টি জানান এবং রাতে স্থানীয় পল্লী চিকিৎসকের নিকট প্রাথমিক চিকিৎসা নেন। পরদিন (০৬ অক্টোবর) অবস্থার অবনতি হলে রাত ৯টায় দেবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হয় দুই কিশোরীকে। পরদিন (০৭ অক্টোবর) উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসাপাতালে প্রেরণ করা হয়।
এইদিকে ঘটনার ১০ দিন পেরিয়ে গেলেও পুলিশ এখনো কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি।
অভিযুক্ত আনসার ভিডিপি সদস্য- চায়না বেগম বলেন, “ঘটনার দিন ডিউটি থেকে আমি কোথাও যাই নি। আমার উপরে যে অভিযোগ আনা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ বানোয়াট। চাইলে সেদিন আমার সাথে থাকা সহকর্মীদের নিকট আমার ব্যাপারে খোঁজ নিতে পারেন।”
দেবীগঞ্জ থানার ওসি (অফিসার ইনচার্জ) জামাল হোসেন বলেন, “ভুক্তভোগীদের ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। দোষীদের চিহ্নিত করতে আমাদের তদন্ত চলমান রয়েছে। আমরা পুরো বিষয়টি নিখুঁত ভাবে পর্যালোচনা করছি। আশা করছি শীঘ্রই আসামী গ্রেফতার সম্ভব হবে।”
এস.এম/ডিএস
মন্তব্য করুন