বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) দেবীগঞ্জ পৌর সদরের বিজয় চত্বরে এই মানববন্ধনের আয়োজন করেন পৌর সদরের ০৮ নং ওয়ার্ডের সর্বস্তরের মানুষ। এই সময় প্রায় দুই শতাধিক নারী-পুরুষকে মিথ্যা সংবাদের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ নিতে দেখা যায়।
জানা যায়, গত ২২ মার্চ পৌর সদরের ০৮ নং ওয়ার্ডের কলেজ পাড়া এলাকায় এক বিবাহিত ছেলের সাথে অবিবাহিত মেয়ের পরকীয়া সম্পর্কের মীমাংসা করতে ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মশিউর রহমান মোর্শেদ বাবু, বাংলাদেশ প্রেস ক্লাব দেবীগঞ্জ উপজেলা শাখার সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম মনু, মেয়ের বাবা সহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে বিষয়টি সমাধানে আলোচনায় বসেন। পরে উপস্থিত সকলের সম্মতিতে বিষয়টির সুষ্ঠু সমাধান করা হয়। আলোচনায় গৃহীত সিদ্ধান্ত নিয়ে কোন পক্ষেরই কোন অভিযোগ ছিল না। তবে দুই পক্ষের অভিযোগ না থাকলেও পরদিন ২৩ মার্চ বাংলাদেশ প্রেস ক্লাব দেবীগঞ্জ শাখার প্রচার সম্পাদক- লাবিবুর রহমান লালন তার ‘সত্যের সন্ধানে’ নামক ফেইসবুক পেইজ থেকে আলোচনার একটি ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করেন। যেখানে দুই পরিবারের সকলের ছবি স্পষ্ট ছিল। ভিডিও প্রকাশের বিষয়টি জানতে পেরে মেয়েটি সেদিনই (২৩ মার্চ) শোয়ার ঘরের দরনার সাথে ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস দেয়। তবে ঘরের দরনা ভেঙ্গে পড়ে যায় মেয়েটি। পরিবারের সদস্যরা বিষয়টি বুঝতে পেরে দরজা খুলে ভেতরে ঢুকলে মুমূর্ষু অবস্থায় মেয়েটিকে পায়। পরে মেয়েটিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। মেয়েটির বাবা একই দিন (২৩ মার্চ) লালন এবং লালনের স্ত্রী শারমিনকে আসামী করে একটি এজাহার দেবীগঞ্জ থানায় জমা দেন। দেবীগঞ্জ থানা ২৭ মার্চ (সোমবার) এজাহারটি নথিভুক্ত করে।
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে ২৮ মার্চ (মঙ্গলবার) বাংলাদেশ প্রেস ক্লাব দেবীগঞ্জ উপজেলা শাখার মুষ্টিমেয় কয়েকজন সদস্যকে সাথে নিয়ে সাংবাদি লালন সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়েরের প্রতিবাদে মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। মানববন্ধনটি এই সংগঠন ব্যতীত উপজেলার অন্য কোন সাংবাদিক সংগঠনের সমর্থন পায়নি। মানববন্ধন শেষে সংগঠনটির বেশ কয়েকজন সদস্য সংবাদ প্রকাশ করেন। যেখানে উল্লেখ করা হয় কাউন্সিলর মশিউর রহমান মোর্শেদ বাবু ঘটনার দিন (২২ মার্চ) সাংবাদিক লালন সরকারের স্ত্রী শারমিনের শ্লীলতাহানি করেন।
ভিত্তিহীন এই সংবাদের প্রেক্ষিতে পৌর সদরের ০৮ নং ওয়ার্ডের কলেজপাড়া এলাকার আপামর জনসাধারণ আজ (বৃহস্পতিবার) মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করেন। এই সময় পৌর মেয়র আবু বকর সিদ্দীক আবু সহ ৯টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলরগণ উপস্থিত ছিলেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ প্রেস ক্লাব, দেবীগঞ্জ উপজেলা শাখার সভাপতি- মঞ্জুরুল ইসলাম মনু একই আলোচনায় উপস্থিত থেকে যৌথভাবে বিষয়টির নিষ্পত্তি করলেও ঘটনার সুষ্ঠু সমাধান হয়নি বলে কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের যে অভিযোগ আনা হয় তা পুরো ভিত্তিহীন। সেদিন এলাকার শতশত মানুষের উপস্থিতিতে কাউন্সিলর বাবুর বিরুদ্ধে সাংবাদিক লালনের স্ত্রীকে শ্লীলতাহানির যে অভিযোগ আনা হয় সেটিও মিথ্যা। বক্তারা আরো বলেন, “এই সংগঠনের যারা সদস্য তাদের বেশির ভাগই মাধ্যমিকের গণ্ডি পার করেনি, সাংবাদিকের ‘স’ ও জানে না। এদের দ্বারা সাংবাদিকতা কিভাবে সম্ভব প্রশ্ন তোলেন বক্তারা। বক্তারা অভিযুক্তদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।”
এস.এম/ডিএস
মন্তব্য করুন