অভিযোগের তীর দেবীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান- রিতু আক্তার; দন্ডপাল ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য- মশিউর ও মাসুদ এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের ভাই রকির দিকে।
নবদ্বীপের পরিবার জানায়, নবদ্বীপ একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে কর্মরত আছেন। গত সোমবার (১২ ডিসেম্বর) তিনি কোম্পানির বার্ষিক কনফারেন্সে যোগদানের উদ্দেশ্যে স্ত্রী বিউটি রানী রায়ের সাথে যান কক্সবাজার। পরদিন মঙ্গলবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুরে কনফারেন্স শেষে রাতে কক্সবাজার ত্যাগ করার কথা ছিল নবদ্বীপ দম্পতির। তবে একই দিন সন্ধ্যায় অভিযুক্তরা কক্সবাজারে নবদ্বীপের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে সেখানে উপস্থিত হয়। পরে নবদ্বীপ ও তার স্ত্রী বিউটির মোবাইল ফোন দুইটি ইউপি সদস্য মশিউর কেড়ে নিয়ে সুইচ অফ কর রাখেন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা না নিয়ে তাদের জোর করে মাইক্রোবাসে তুলে নেন।
বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) তাদের বেলা ১২টায় মাইক্রোবাসে নীলফামারীর ডোমার এশিয়ান হাইওয়ের রেল ক্রসিং এলাকায় এনে বিউটি ও নবদ্বীপকে আলাদা করে পৃথক স্থানে আটকে রাখেন সীমার স্বজনরা। গতকাল বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) সকালে নবদ্বীপকে সদর ইউনিয়নের বৈরাগী পাড়ায় সীমার নিজ বাসায় এনে মারধর করে অ্যাফিডেভিটে স্বাক্ষর নেওয়া হয় এবং জোরপূর্বক সীমার সাথে বিয়ে দেওয়া হয়।
পরে খবর পেয়ে দেবীগঞ্জ থানা পুলিশ নবদ্বীপকে উদ্ধার করে দেবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করায়। পরে পুলিশ বিউটিকে ফেরত দেবার জন্য চাপ প্রয়োগ করলে ভাইস চেয়ারম্যান রিতু আক্তার, লোক মারফত তাকে তার পৈতৃক বাড়ীতে পৌঁছে দেয়। পুলিশ বিউটির বাড়ীতে পৌঁছানোর অপেক্ষা করে এবং মুঠোফোনে নিশ্চিত হবার পর ঘটনাস্থল থেকে ফিরে আসে।
সীমা রায় বলেন, “নবদ্বীপের সাথে আমার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু কিছুদিন আগে সে আমাকে না জানিয়ে অন্য জায়গায় বিয়ে ঠিক করলে আমি বিয়ের দাবিতে তার বাসায় গিয়ে ২৪ দিন অবস্থান করে বুধবার দিবাগত রাতে পরিবারের সদস্যদের সাথে বাসায় ফিরে আসি।”
নবদ্বীপ বলেন, “সীমার সাথে আজ তিন বছর আগে প্রেমের সম্পর্ক ভেঙ্গে যায়। সম্প্রতি সে আমার বিয়ে অন্য জায়গায় ঠিক হওয়ার কথা শুনে বিয়ে করার জন্য চাপ দিতে থাকে। বিউটির সাথে আমার বিয়ে হয়েছে এটা জেনেও জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে অপহরণ করে সীমার স্বজনরা আমাকে মারধর করে তার সাথে আমার বিয়ে দেয়। আমি এই বিয়ে মানি না এবং এর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিব।”
এদিকে বুধবার(১৪ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে সীমা তার ভাই উজ্বল রায়, মামা ধরনী রায়, সদরের ইউপি সদস্য- ভরত চন্দ্র রায়ের সাথে নিজ বাসায় ফিরে যায়। তবে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী বৃহস্পতিবার সকালেই সীমা ও নবদ্বীপের বিয়ে দেওয়া হয়।
ভাইস চেয়ারম্যান রিতু আক্তার বলেন, “নবদ্বীপকে বার বার ডাকার পরেও যখন সে আসেনি তখন মেম্বারদের সাথে নিয়ে তিনি নবদ্বীপ আনতে গিয়েছিলেন। তিনি আরো বলেন, নবদ্বীপ ও সীমার চলমান বিষয়টির তিনি মীমাংসা করতে চেয়েছিলেন।”
দেবীগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রঞ্জু আহমেদ বলেন, “সকালে খবর পেয়ে নবদ্বীপকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করায় পুলিশ। কোন পক্ষ থেকে এখনো অভিযোগ দেওয়া হয়নি। অভিযোগ দেওয়া হলে তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
এস.এম/ডিএস
মন্তব্য করুন