পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের টিউবওয়েলের পানিতে বিষ প্রয়োগের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়দের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। তবে অনাকাঙ্ক্ষিত এক ঘটনায় অসুস্থতার কোন খবর পাওয়া যায় নি।
গত রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলার দন্ডপাল ইউনিয়নের মৌমারি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটে। এ ঘটনায় উপজেলা প্রশাসন বিষয়টি অধিকতর তদন্তে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করেছে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, বিদ্যালয়ে থাকা শিশু শিক্ষার্থীদের জন্য খাবার পানির টিউবওয়েলে দুষ্কৃতিকারীরা ফসলে ব্যবহৃত কীটনাশক প্রয়োগ করেছে। রোববার দুপুরে ওই টিউবওয়েলে পানি খেতে গিয়ে আনন্দ নামে এক চতুর্থ শ্রেণীর শিক্ষার্থী পানিতে বিষাক্ত দুর্গন্ধ পেয়ে শিক্ষকদের অবগত করলে টিউবওয়েলটি সাময়িক বন্ধ করে দেয়া হয়। বিষয়টি বিদ্যালয়সহ পুরো এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়দের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করতে দেখা যায়।
এবিষয়ে বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিশু শিক্ষার্থী আনন্দ বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী টিফিন টাইমে টিউবওয়েলের পানি নিতে যায়। এসময় তারা পানিতে ফেনা ও দুর্গন্ধ পায়। এসময় পাশে আমি দুর্গন্ধ পেয়ে পানি দেখে তাদের খাইতে নিষেধ করে স্যারদের জানাই।
শিক্ষার্থী দৃষ্টি রানী বলেন, এই ঘটনার পর থেকে আমরা টিউবওয়েলের পানি খেতে পারছি না। আমাদের মা-বাবারাও ভয়ে আছে। আমরা অনেকেই বাড়ি থেকে পানি এনেছি। আবার স্যার-ম্যাডাম বাইরে থেকে পানি বালতিতে এনে রেখেছে আমাদের জন্য।
তবে অভিভাবক ও স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, দুষ্কৃতিকারীরা যে ঘটনা ঘটিয়েছে, এটি ন্যাক্কারজনক। আমাদের এই শিশু শিক্ষার্থীরা কি দোষ করেছে। যদি এই পানি খেয়ে আমাদের কোনো শিশু শিক্ষার্থী মারা যেত তাহলে কি একটা অবস্থা তৈরি হতো ভেবে ভয় লাগছে। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে জড়িতদের কঠোর বিচার দাবি করছি।
মৌমারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রোশন আক্তার বলেন, সব শিক্ষার্থী ভয়ে আছে, সঙ্গে অভিভাবকরাও ভয়ের মধ্যে আছে। না জানি কে কখন কোন বিপদে পড়ে যায়। তবে আমরা অনেকদিন ধরে লক্ষ্য করছি রাতে বিদ্যালয়ের বারান্দায় অবস্থান নেয় মাদক সেবনকারীরা। তারা দীর্ঘসময় অতিবাহিত করেন, মূলত তারাই এই ঘটনাটি ঘটাতে পারে।
এবিষয়ে দেবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শরীফুল আলম বলেন, খবর পেয়ে আমরা ও পুলিশ প্রশাসন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এ ঘটনায় পুলিশ কিছু আলামত সংগ্রহ করে তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এবং পুলিশ একটি সাধারণ ডায়েরি করেছে। এদিকে বিষয়টি তদন্তে ঘটনার দিন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত কমিটির দায়ের করা প্রতিবেদনে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তথ্যসূত্র: সময় টিভি
এস.এম/ডিএস
মন্তব্য করুন