দেবীগঞ্জ বাজারের মামা-ভাগিনা বিরিয়ানী হাউজ রেস্টুরেন্টে তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে হামলার শিকার হন সময়ের কন্ঠস্বর পত্রিকার পঞ্চগড় জেলা প্রতিনিধি ও সকালের সময়ের উপজেলা প্রতিনিধি নাজমুস সাকিব মুন, দৈনিক নীলকথা দেবীগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি সিরাতুল মোস্তাকিম এবং দৈনিক বসুন্ধরা পত্রিকার দেবীগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি লাবিবুর রহমান লালন।
গত বুধবার (১২ জুলাই) সকালে সাড়ে ১১টায় ঐ রেস্টুরেন্টের ভিতরে এই ঘটনা ঘটে। রেস্টুরেন্টটি আগে ইয়ামি ফুড নামে পরিচালিত হতো। তবে পূর্বের পরিচালকের সময় এমন কোন অভিযোগ কখনই উঠেনি।
বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) দুপুরে এই ঘটনায় সাংবাদিক নাজমুস সাকিব মুন বাদী হয়ে রেস্টুরেন্ট মালিক হাবিব, ম্যানেজার সিরাজুল এবং রেস্টুরেন্টের পার্টনার জসিমকে আসামি করে দেবীগঞ্জ থানায় এজাহার দায়ের করেন।
ঘটনার অনুসন্ধানে জানা যায়, মামা ভাগিনা বিরিয়ানি হাউজ নামক ঐ রেস্টুরেন্টে স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছেলে-মেয়েদের অতরঙ্গে সময় কাটানোর সুযোগ করে দেয়া হচ্ছে গত দেড়-দুই মাস থেকে। গতকাল বুধবার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সেখানে উল্লেখিত তিন সাংবাদিক উপস্থিত হলে ডোমার থেকে আগত দুই ছেলে-মেয়েকে অপ্রীতিকর অবস্থায় পায়, যে মেয়েটি ডোমারের একটি স্কুলে নবম শ্রেণীতে পড়েন। তৎক্ষনাৎ বিষয়টি দেবীগঞ্জের ওসি সরকার ইফতেখারুল মোকাদ্দেমকে ফোনে অবহিত করেন সাংবাদিক মুন। রেস্টুরেন্টে যাওয়ার পূর্বে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গোলাম ফেরদৌসকেও বিষয়টি ফোনে অবগত করা হয়। এরই মাঝে হোটেলের মালিক হাবিব সেখানে উপস্থিত হয়ে সাংবাদিকদের উপর চড়াও হন এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন। পরে তার নির্দেশে রেস্টুরেন্টের শাটার লাগিয়ে দেয় হোটেলের ম্যানেজার সিরাজুল ও পার্টনার জসিম। এরপর হাবিব সাংবাদিকদের পেটানোর জন্য লাঠি আনতে বলেন। হাবিবের নির্দেশ পেয়ে সিরাজুল এই সময় কিচেন থেকে চাপাতি এনে সাংবাদিক লালনের ঘাড়ে চেপে ধরে। ঘটনার আধা ঘণ্টা পর দেবীগঞ্জ থানার এসআই ইয়াকুব ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে শাটার খুলে তিন সাংবাদিককে উদ্ধার করেন।
এদিকে নিজেদের অপকর্ম আড়াল করতে রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার সিরাজুল ইসলাম বাদী হয়ে তিন সাংবাদিকের নামে থানায় চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে এজাহার দায়ের করেন।
পঞ্চগড় জেলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি আনিস প্রধান বলেন, “আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তবে অনিয়ম, অপরাধ, দুর্নীতির তথ্য সংগ্রহ ও সংবাদ প্রকাশ করতে গিয়ে যদি সাংবাদিকদের জিম্মি করা হয়, মিথ্যা মামলা দেওয়া হয় তাহলে আইনের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলবেন সাধারণ মানুষ। আমরা আশা করছি পুলিশ পর্যাপ্ত তদন্ত করেই আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।”
দেবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরকার ইফতেখারুল মোকাদ্দেম বলেন, “আমরা উভয় পক্ষের দুইটি এজাহার পেয়েছি। বিষয়টি যাচাই করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
এস.এম/ডিএস
মন্তব্য করুন