আদালতে ভুল প্রতিবেদন দাখিলের অভিযোগে বিভাগীয় মামলা দায়ের হয়েছে এক ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলার সুন্দরদিঘি ইউনিয়ন ভূমি অফিসের এই কর্মকর্তার নাম আব্দুল জলিল। সম্প্রতি ৫ মে জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক পত্রে তা জানা যায়। যার স্মারক নম্বর ৩১.৫৫.৭৭০০.০১৭.২৭.০১৩.২৩-৫৮০।
সূত্র জানায়, গত বছর সোনাহার আকন্দপাড়ার নজর আলীর ছেলে আব্দুর রশিদ মালিকানা সংক্রান্ত জটিলতা নিরসন ও জমি দখলে পেতে সদর ইউনিয়নের বগড়ডাঙ্গা এলাকার সুরমান আলী গং এর বিরুদ্ধে ২৫ অক্টোবর বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন। মামলায় আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত দাবিকৃত এলাকার প্রকৃত অবস্থান ও ভোগ দখলের সার্বিক তথ্য জানাতে সরেজমিন তদন্তের নির্দেশ দেন সুন্দরদীঘি ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আব্দুল জলিলকে।
আদালতের নির্দেশের প্রেক্ষিতে ওই কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে না গিয়ে বাদী পক্ষের নিকট অনৈতিক সুবিধা গ্রহণ করে দাবিকৃত জায়গাটি আব্দুর রশিদের ভোগ দখলে আছে বলে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেন। ভূমি কর্মকর্তার তদন্ত প্রতিবেদন ও আদালতের আদেশের প্রেক্ষিতে গত ১৬ নভেম্বর আব্দুর রশিদ গং দুইটি ট্রাক্টর দিয়ে ওই জায়গার ফসলের খেতে চাষ দেয়। যদিও আদালত খেতে চাষের বিষয়ে কোন আদেশ দেননি। ২৪ নভেম্বর ভুক্তভোগী কৃষকদের পক্ষ থেকে আব্দুর রশিদকে আসামী করে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়।
পরে ৪ ডিসেম্বর ভুক্তভোগী কৃষকদের পক্ষ থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট আদালতে মিথ্যা প্রতিবেদন দাখিলের বিষয়টি উল্লেখ করে আব্দুল জলিলের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে সহকারী কমিশনার (ভূমি) গোলাম রব্বানী সরদার সরেজমিন তদন্ত করে ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আব্দুল জলিলের পূর্বের প্রতিবেদনটিকে মিথ্যা উল্লেখ করে প্রতিবেদন জমা দেন।
এরই প্রেক্ষিতে সরকারি কর্মচারী বিধিমালা (শৃঙ্খলা ও আপিল) ২০১৮ এর বিধি মোতাবেক আব্দুল জলিলকে ‘অসদাচরণ’ এর অভিযোগে অভিযুক্ত করে বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হয়। যার মামলা নং ০৪/২০২৩ (রাজস্ব)।
এইদিকে নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানায়, বিভাগীয় মামলার শাস্তি থেকে রেহাই পেতে আব্দুল জলিল স্বেচ্ছায় অবসরে যাওয়ার পাঁয়তারা করছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গোলাম ফেরদৌস সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, “আইন অনুযায়ী যেটা বৈধ সেটাই হবে। এই ব্যাপারে পুরো দায়িত্ব জেলা প্রশাসক স্যারের।”
এস.এম/ডিএস
মন্তব্য করুন