পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে হোসেন আলী ওরফে সজীব (১৪) নামে এক কিশোরকে কাজের কথা বলে সিরাজগঞ্জ নিয়ে গিয়ে তাকে জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায়ের চেষ্টা করে অপহরণকারীরা। দেওয়া হয় বৈদ্যুতিক শক। এঘটনায় একজনকে গ্রেফতার করেছে দেবীগঞ্জ থানা পুলিশ।
অপহরণের স্বীকার সজীব বর্তমানে দেবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছে। সজীব দেবীগঞ্জ উপজেলার দণ্ডপাল ইউনিয়নের খারিজা গুয়াগ্রাম উনিশ ঘর এলাকার কবাদ আলীর ছেলে। সে ফুলবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র।
ভুক্তভোগী ও দেবীগঞ্জ থানা সূত্র জানায়, গত ২৭ নভেম্বর সজীবের প্রতিবেশী শামসুল হকের ছেলে গোলাম মোস্তফা সজীবকে কাজ দেওয়ার কথা বলে সিরাজগঞ্জ নিয়ে যায়। এরপর উল্লাপাড়া উপজেলার নতুন দাউদপুর এলাকার হযরত আলীর ছেলে ইসমাইল হোসেনের বাড়িতে আটকে রেখে সজীবের কাছে থাকা ১০ হাজার টাকা নিয়ে নেয় মোস্তফা ও ইসমাইল। পরে আবারো ৩ লাখ টাকা মুক্তিপণ দেওয়ার জন্য বাবা-মার সাথে কথা বলতে চাপ দেয় সজীবকে। তবে দরিদ্র পরিবারের সন্তান হওয়ায় সজীব তার বাবা-মাকে মুক্তিপণের টাকার কথা জানায়নি। এরমধ্যে সজীব দুই তিনবার বাসায় কথা বললেও জিম্মি হওয়ার কথা বলেনি।
গত শুক্রবার (০১ ডিসেম্বর) রাতে সুযোগ বুঝে সজীব ইসমাইলের বাড়ি থেকে কৌশলে পালিয়ে এসে বাস এবং ট্রেনযোগে শনিবার বাসায় ফিরে। এই সময় সজীবের ঘাড় ও বাম হাতে বৈদ্যুতিক শকে ঝলসে যাওয়া অবস্থায় দেখতে পান তার বাবা-মা। যদিও সজীব বলছে জ্ঞান থাকা অবস্থায় তাকে বৈদ্যুতিক শক দেওয়া হয়নি।
ধারণা করা হচ্ছে, কোমল পানীয়তে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অজ্ঞান হওয়ার পর সজীবের জ্ঞান ফিরতে দেরী হয়। দ্রুত জ্ঞান ফেরানোর জন্য তার বাম হাতে ও ঘাড়ে তার পেচিয়ে বৈদ্যুতিক শক দেওয়া হয়। এই কারণে সজীব বৈদ্যুতিক শকের ব্যাপারে কিছু বলতে পারছে না।
এদিকে অপহরণকারী ইসমাইল সজীবের পিছু নিয়ে শনিবার কালীগঞ্জ বাজার পর্যন্ত আসলে তাকে স্থানীয়রা আটক করে পুলিশে খবর দেয়। পরে ইসমাইলে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়।
এঘটনায় সজীবের বাবা বাদী হয়ে শনিবার (২ডিসেম্বর )রাতে দুইজনের নাম উল্লেখ করে দেবীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন।
দেবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরকাত ইফতেখারুল মোকাদ্দেম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, “একজন আসামীকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। অপর আসামীকে গ্রেফতারে আমরা কাজ করছি।”
এস.এম/ডিএস
মন্তব্য করুন