তুলনামূলক উঁচু জমিতে কার্তিকের শুরু থেকেই আমন ধান কাটা শুরু হয়। ইতিমধ্যে উপজেলার প্রায় ৭০ ভাগ জমির ধান কাটা শেষ, চলছে মাড়াই ও শুকানোর কাজ। গ্ৰাম-গঞ্জে শুরু হয়েছে নতুন ধান ঘরে তুলে তা দিয়ে বিভিন্ন রকম পিঠা-পায়েশ তৈরির উৎসব।
উপজেলার বিভিন্ন ফসলের মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, মাঠজুড়ে পেকে আছে সোনালি ধান। এবছর পর্যাপ্ত পরিমাণে বৃষ্টিপাত এবং তুলনামূল ধানের রোগবালাই কম থাকায় আমান ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। বিঘা প্রতি গুটি স্বর্ণ ১৭ থেকে ১৮ মন এবং সুফল স্বর্ণ বা চিকন ধান ১৫ থেকে ১৬ মন পর্যন্ত উৎপাদন হয়েছে। এদিকে বাজারে নতুন ধান মনপ্রতি ১হাজার ৫০ টাকা থেকে শুরু করে ১ হাজার ২০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। সরকারি ভাবে এলএসডি থেকে ১হাজার ২০০ টাকা দরে ধান কেনার মাইকিং করা হয়েছে।
এদিকে সার,বীজ ও কীটনাশকের দামের পাশাপাশি শ্রমিকের পারিশ্রমিক বেশি হওয়ায় আশানুরূপ লাভ করতে পারছেন না কৃষকেরা।
দেবীডুবা ইউনিয়নের মহালদার পাড়া এলাকার আক্তারুজ্জামান নামে আরেক কৃষক জানায়, “এবছর সার, বীজ ও ডিজেলের দাম অনেক বেশি। প্রতি বিঘা ধান কাটতে শ্রমিককে দিতে হয় ১হাজার ৮ শত থেকে শুরু করে ২ হাজার টাকা। এছাড়া মাড়াই এবং অন্যান্য খরচ তো আছেই। বাজারে বর্তমানে যে দাম আছে তাতে খুব একটা লাভ হচ্ছে না।”
টেপ্রীগঞ্জ ইউনিয়নের গাজকাটী এলাকার কৃষক জামরুল ইসলাম জানায়, “বর্তমানে ধান চাষ করি খাওয়ার জন্য। কেননা ধানের বীজ বোপন থেকে শুরু করে বাড়িতে নিয়ে আসা পর্যন্ত যে পরিমাণে খরচ হয় তাতে সব খরচ বাদ দিয়ে বিঘা প্রতি ৪/৫ হাজার টাকার বেশি থাকে না।”
দেবীগঞ্জ সদর ইউনিয়নের দেবীডুবা এলাকার মিজানুর নামে আরেক কৃষক জানায়, “ধান কাটা শেষের দিকে। ধান উঠিয়ে আলু অথবা ভুট্টা লাগবো।ধানের তুলনায় ভুট্টায় পরিশ্রম কম লাভ বেশি।”
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, খরিপ-২ (২০২৩-২৪ )মৌসুমে দেবীগঞ্জ উপজেলায় মোট ২৩ হাজার ৯ শত ৩০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন চাষ করা হয়েছে। এরমধ্যে ১৮ হাজার ৩ শত ৯০ হেক্টর জমিতে উফশী, ৫ হাজার ৫ শত ২০ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড এবং ২০ হেক্টর জমিতে স্থানীয় নোনিয়া জাতের ধান চাষ করা হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ নাঈম মোর্শেদ বলেন, “গতবছরের তুলনায় এবছর রোপা আমান ধানের চাষ বেড়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে কৃষকদের ধানের বিভিন্ন ধরনের রোগ বালাই ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে সার্বিক দিক নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।”
এস.এম/ডিএস
মন্তব্য করুন