করোনার আরেকটি নতুন ঢেউ আসার মতো বৈশ্বিক পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে বলে সতর্ক করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। সবাইকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের স্বাস্থ্য বিষয়ক সংস্থাটি।
মহামারি করোনাভাইরাসের নতুন বিএ পয়েন্ট ফাইভ (বিএ.৫) সাব-ভ্যারিয়েন্ট বা উপ-ধরনটি আগের ডেল্টা বা ওমিক্রন ধরনের তুলনায় অনেক বেশি বিপজ্জনক বলে উল্লেখ করেছেন ডব্লিউএইচওর শীর্ষ বিজ্ঞানী সৌম্য স্বামীনাথান।
একইসঙ্গে তিনি সতর্ক করেছেন, করোনার নতুন বৈশ্বিক ঢেউ আসার মতো পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। এ বিষয়ে ডব্লিউএইচওর সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়ে রাখারও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
বিএ পয়েন্ট ফাইভ করোনাভাইরাসের সবচেয়ে সংক্রামক পরিবর্তিত ধরন ওমিক্রনের একটি উপধরন। তবে এ ভাইরাসটির মারণক্ষমতা অন্যান্য পরিবর্তিত ধরনের তুলনায় বেশি।
বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) এক টুইটবার্তায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এ শীর্ষ বিজ্ঞানী বলেন, গত কয়েক মাস সংক্রমণ ও মৃত্যু শিথিল থাকার পর বিশ্বব্যাপী আবারও করোনার ভয়াবহতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। দিন দিন পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, প্রতিদিনই এ রোগে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। বিএ পয়েন্ট ফাইভ নামের উপধরনটির প্রভাব, সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আমাদের উদাসীনতা, বিশ্বজুড়ে করোনা টিকার বণ্টনে চরম অসমতা এ উত্থানের কারণ।
পৃথক আরেক টুইট বার্তায় সৌম্য স্বামীনাথান জানান, বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ, দক্ষিণ আমেরিকা, প্রশান্ত মহাসাগরের পশ্চিম উপকূলের বিভিন্ন দেশ ও ভূমধ্যসাগরীয় দেশগুলোতে দৈনিক সংক্রমণ-মৃত্যুতে ঊর্ধ্বগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সংক্রমণ-মৃত্যুর হিসাবে বর্তমানে শীর্ষে রয়েছে ফ্রান্স, জার্মানিসহ গোটা ইউরোপ।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে বিশ্বের প্রথম করোনায় আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয় চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে। করোনায় প্রথম মৃত্যুর ঘটনাটিও ঘটেছিল চীনে।
তারপর প্রাণঘাতী এ ভাইরাসটি দ্রুতগতিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ২০২০ সালের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করে ডব্লিউএইচও। কিন্তু তাতেও অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় অবশেষে ওই বছরের ১১ মার্চ করোনাকে মহামারি হিসেবে ঘোষণা করে ডব্লিউএইচও।
এ পর্যন্ত বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৫৬ কোটি ৬৩ লাখ ১৭ হাজার ১৮৩ জন এবং এ রোগে মৃত্যু হয়েছে মোট ৬৩ লাখ ৮৫ হাজার ৭৭৮ জনের। গত আড়াই বছরে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হয়ে উঠেছেন মোট ৫৩ কোটি ৭৬ লাখ ৪৫ হাজার ৪২৭ জন।
চলতি বছরের শুরু থেকে বিশ্বজুড়ে তাণ্ডব চালানো করোনার ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টকে ‘সুপারস্প্রেডার’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন বিজ্ঞানীরা। তবে ওমিক্রনেরই সাব-ভ্যারিয়েন্ট বিএ পয়েন্ট ফাইভ (বিএ.৫) আরও বেশি ঝুঁকিপূর্ণ বলে ধারণা করা হচ্ছে।
খবর হিন্দুস্তান টাইমস
মন্তব্য করুন